بسم الله الرحمن الرحيم
মানুষের আত্নাসমূহ সভাবত:ই যে তার প্রতি সহানুভূতিশীল উহাকে সে অত্যন্ত মহব্বৎ করে। আর তাইতো শ্রেষ্টত্যের কারনে পিতার প্রতি সন্তানের অতুলনীয় ভালবাসা, অসুস্থ্য ব্যক্তি যার প্রচেষ্টায় সুস্থতা লাভ করে তার প্রতি তার ভালবাসা বৃদ্ধি পায়, তদ্রুপ ছাত্র শিক্ষককে শ্রদ্ধা-ভক্তি করে ভালবাসে, কারন সে তার থেকে জ্ঞান লাভ করেছে, অত্যাচারিত ও নিপীড়িতকে যে সাহায্য করে সে তাকে অকাতরে স্বরণ করে এবং ভালবাসে, এভাবে প্রত্যেকেই তার প্রতি যে ব্যক্তি ইহসান করেছে তাকে সে ভালবাসে।
সুতরাং সকল মানুষের প্রতি যে সত্তার সর্বাধিক দয়া ও অনুকম্পা তাঁর প্রতি সকলের ভালবাসার মাত্রাটা কি পরিমাণ হওয়া উচিৎ ? আর তিনিই হলেন পরম করুনাময়-দয়ালু সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়া’লা যিনি তাঁর বান্দার পাপ সমূহ ক্ষমা করেন, টেনশন দূর করেন, দু:খ কষ্ট লাঘব করেন, ভাংগা হৃদয়কে সতেজ করেন, ফকীরকে ধনী করেন, মূর্খকে জ্ঞান দান করেন, পথভ্রষ্টকে সঠিক পথ দান করেন, পথহারা পেরেশাণী ব্যক্তিকে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেন, হতভাগাকে সাহায্য করেন, ক্ষুধার্তকে খাদ্যদানে তৃপ্তি দান করেন, বস্ত্রহীনকে পোষাক দান করেন, অসুস্থ্যকে আরোগ্য দান করেন , বালা-মুসিবতে আপতিত ব্যক্তিকে উহা হতে রক্ষা করেন, তাওবাকারীর তাওবা কবুল করেন, সৎকর্মশীলদের উত্তম প্রতিদান প্রদান করেন , মাজলুমকে সাহায্য করেন, দাম্ভিকের শক্তি খর্ব করেন, নি:স্বকে স্বাবলম্বী করেন, ক্ষতিগ্রস্থদের উহা হতে উদ্ধার করেন, পাপিষ্টর দোষ-ত্রুটি গোপন রাখেন এবং ভীতি-সন্ত্রষ্ট ব্যক্তিকে নিরাপত্তা প্রদান করেন। সুতরাং এই কারনে আল্লাহ তায়ালার ভালবাসাই হল “অন্তর পুনর্জীবিত, রুহের খোরাক ”এর নামান্তর। উল্লেখ্য যে, অন্তরের প্রকৃত স্বাদ, কোন নিয়া’মত লাভ, প্রকৃত সফলতা এবং স্বজীবতা কোন কিছুই অর্জিত হয় না, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তায়ালার ভালবাসা অর্জন ব্যতীরেকে। আর তাইতো অন্তর যখন উহাকে হারিয়ে ফেলে তখন উহার বিরীহ-ব্যাথা সবচেয়ে বেশি অনুভুতি হয়, যা চোখের জ্যোতি হারানো এবাং কানের শ্রবণশক্তি লোপ পাওয়ার চেয়েও মারাত্নক।”
যখন তুমি তোমার মায়ের পেটে ছিলে, যে সময়ে তোমার অবস্থা ছিল অত্যন্ত দুর্বল এবং তুমি উল্লেখযোগ্য বলতে কিছুই ছিলে না, তখন হতে অদ্যাবধি তোমার প্রতি মহান আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়ার পরিমাণ কতটুকু তা কি তুমি সঠিকভাবে বিবেচনা করেছো ? যে সময়ে আল্লাহ তায়ালা তোমাকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করেছেন, খাদ্যনালীর সাহায্যে তোমার পেটে খাদ্য সংগ্রত করেছেন। উল্লেখ্য যে, তুমি ছিলে অন্ধাকারের তিনটি স্তরে। অত:পর তিনিই তোমাকে দুনিয়াতে পাঠালেন এমতাবস্থায় তুমি কিছুই জানতে না, তারপর আল্লাহ তায়া’লা তোমার করুনাময় মাকে তোমার পরিচর্চার জন্য প্রস্তুত করলেন, যে মা তার নিজের শরীরের চেয়েও তোমার প্রতি অতুলনীয় যত্নশীল হয়ে তোমাকে প্রতিপালন করলেন। তার স্তন হতে তোমাকে বিরতিহীনভাবে দুধ পান করাতেন এবং তার স্বীয় হাত দ্বারা তোমার শরীর হতে কষ্টদায়ক বস্তু পরিস্কার করতেন। তোমাকে খাওয়ানোর ক্ষেত্রে তার নিজের উপর তোমাকে প্রাধান্য দিতেন, তার কোলকে তোমার জন্য দুলনা স্বরুপ করলেন, আর অত্যন্ত দয়া-মায়া, ও আদর-সোহাগ করে তোমাকে গড়ে তুলতেন।
কোন এক সালফে সালেহীন বলেন : “ যদি তুমি যথাযথভাবে তোমার উপর প্রদ্ত্ত আল্লাহর নিয়ামত উপলব্ধি করতে চায় তাহলে তোমার চক্ষুদয়কে বন্ধ রাখ”। আল্লাহ তায়া’লা ইরশাদ করেন–
) وَمَا بِكُم مِّن نِّعْمَةٍ فَمِنَ اللَّهِ ۖ ثُمَّ إِذَا مَسَّكُمُ الضُّرُّ فَإِلَيْهِ تَجْأَرُونَ (النحل : 53)
অর্থাৎ : যে নি’য়ামতই তোমরা পেয়েছ তাতো আল্লাহর নিকট হতেই। আর যখন দু:খ-কষ্ট তোমাদেরকে স্পর্শ করে, তখন তার কাছেই তোমরা আকুল আবেদন জানাতে থাক। ( সুরা নাহল:৫৩)
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন :
}اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَأَنزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَأَخْرَجَ بِهِ مِنَ الثَّمَرَاتِ رِزْقًا لَّكُمْ ۖ وَسَخَّرَ لَكُمُ الْفُلْكَ لِتَجْرِيَ فِي الْبَحْرِ بِأَمْرِهِ ۖ وَسَخَّرَ لَكُمُ الْأَنْهَارَ. وَسَخَّرَ لَكُمُ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ دَائِبَيْنِ ۖ وَسَخَّرَ لَكُمُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ. وَآتَاكُم مِّن كُلِّ مَا سَأَلْتُمُوهُ ۚ وَإِن تَعُدُّوا نِعْمَتَ اللَّهِ لَا تُحْصُوهَا ۗ إِنَّ الْإِنسَانَ لَظَلُومٌ كَفَّارٌ{ (إبراهيم :32-34 (
অর্থাৎ : “তিনিই আল্লাহ যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন, তিনি আকাশ হতে পানি বর্ষণ করেন যা দিয়ে নানা প্রকার ফলফলাদি জন্মে তোমাদের জীবিকার জন্য। যিনি নৌযানগুলোকে তোমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন করে দিয়েছেন, যাতে সেগুলো তাঁর নির্দেশে সমদ্রে চলাচল করে আর তিনি নদীগুলোকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। তিনি সৃর্য ও চন্দ্রকে তোমাদের কাজে লাগিয়ে রেখেছেন, তারা অনুগত হয়ে নিজ পথে ছলছে। আর তিনি রাত ও দিনকে তোমাদের কাজে লাগিয়ে রেখেছেন। তিনি তোমাদেরকে সে সব কিছুই দিয়েছেন যা তোমরা চেয়েছ , তোমরা তোমাদের প্রয়োজনীয় সবকিছুই পেয়েছ, তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ গণনা করতে চাইলে কক্ষনো তার সংখ্যা নির্ধারণ করতে পারবে না। মানুষ অবশ্যই বড়ই জালিম, বড়ই অকৃতজ্ঞ।” (ইবরাহীম:৩২-৩৪)
আল্লাহ তায়া’লার নিয়া’মত সমূহের মধ্যে যেমন : –
আল্লাহ তায়া’লা তোমার সম্মান – ইজ্জত রক্ষা করেন এইভাবে যে ব্যক্তি তোমার সম্মান নষ্ট করে তাকে উহার শাস্তি প্রয়োগের মাধ্যমে, যে ব্যক্তি তোমাকে মিথ্যা অপবাধ দিয়েছে উহার যথাযত শাস্তি প্রদানে, যে ব্যক্তি তোমার সম্পদ চুরি করেছে উহার হাত কর্তনের মাধ্যমে আল্লাহ তায়া’লা তোমার সম্পদ হেফাজত করে থাকেন। তদ্রুপ আল্লাহ তায়া’লা তোমার জন্য কসর স্বলাতের বিধান প্রনয়ণ করেছেন সফরের কষ্ট লাঘব করতে , তোমার প্রতি দয়া স্বরুপ তিনি অযূর ক্ষেত্রে পা ধৌত করার পরিবর্তে মোজার উপর মাসেহ করার বিধান প্রণয়ন করেছেন, যেন মোজা খুলতে ও উহা পূণরায় পরিধান করতে না হয়। এভাবেই তোমার স্বাস্থ্য সংরক্ষণে তোমার জন্য মৃত্যু প্রাণীর গোস্ত বৈধ ঘোষনা করেছেন এবং যে তোমার কোন প্রকার ক্ষতি সাধন করবে তাকে তৎক্ষনাত বা কিছু বিলম্বে হলেও শাস্তি প্রদানের সাবধাণতা প্রদান করেছেন।
আমাদের প্রতি আল্লাহ তায়া’লার করুণার স্বরুপ
অত:পর আপনার প্রতি আল্লাহ তায়ালার করুণাধারা ভেবে দেখুন: তিনিই আপনাকে যাবতীয় বিপদ-আপদ হতে রক্ষা করেন, আপনার সকল দায়িত্বভার গ্রহণ করে থাকেন, কারন মানুষ স্বভাবত:ই স্বয়ং নিজকেই রক্ষা করতে অক্ষম, এবং তার কোন ভালকাজ করার ক্ষমতা শক্তি নাই, তদ্রুপ পাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকার কোন উপায় নাই একমাত্র তার রবের দয়া ও ইচ্ছা ছাড়া। তার অন্তর কোন কাঠির মাথায় নিবযুক্ত কলমের ন্যায় যা বিস্তীর্ণ ভূমিতে নিক্ষেপ করা হল, অত:পর তীব্র বাতাস উহাকে ডানে-বামে পরিবর্তন করতে লাগল। তিনি নিজেকে সমুদ্রের জাহাজের যাত্রী হিসাবে দেখেন তিনি সমুদ্রের একটি জাহাজের যাত্রী হিসাবে নিজেকে সাক্ষী,যা বাতাস দ্বারা প্রবাহিত হয় এবং তরঙ্গ দ্বারা চালিত হয়, এটি কখনও কখনও উহাকে যেন উপরে হাকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আবার কখনও নীচের দিকে নামিয়ে দিচ্ছে তাকদীরের বিধান অনুপাতেই তার উপর এভাবে উহা পরিচালিত হচ্ছে। সে তার অভিভাবকের নিকট একটি যন্ত্রের ন্যায় যাকে দরজার নিকট রাখা হল এমতাবস্থায় যে, সে তার গালটি উক্ত দরজার উপর রেখে দিল। তার অবস্থা এমন যে, সে তার নিজের কোন উপকার বা ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখেনা এবং জীবন দান ও মৃত্যু দান ও কবর থেকে উঠানোরও বিন্দুমাত্র ক্ষমতা রাখেনা। তার অজ্ঞতা ও জুলম এবং উভয়ের প্রভাব ও প্রয়োজনীয়তা ছাড়া তাঁর নিজের কিছুই নেই। সুতরাং তার ধ্বংস তথা মৃত্যু যেন তার নিকট সেন্ডেলের ফিতার চেয়েও অতি নিকটে অবস্থান করছে, তার অবস্থা সেই ছাগলটির ন্যায় ভয়ংকর যাকে নেকড়ে বাঘ ও হিংস প্রাণীর সম্মুখে রাখা হল। একমাত্র রাখাল ছাড়া তাকে উহা হতে প্রতিহত করার মত কেউ নাই, যদি সে চোখের পলক ফিরানো সময় তাকে ত্যাগ করে তবে তার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো খন্ড-বিখন্ড করে তারা তাকে খেয়ে ফেলবে ।
হে পরওয়ারদিগার ! আপনার নিকটেই আমার সমস্ত আশা-ভরসার পরিসমাপ্তি ঘটে,আপনিই আমার সকল দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন, আপনিই আমাকে সকল প্রকার বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করেন, ক্ষতিকারক সব কিছুকে আমার হতে প্রতিহত করেন, আমার উপর আক্রমণ কালে উহা হতে আমাকে রক্ষা করেন, আপনিই আমাকে সাহায্য করেন এবং আমাকে ধনীর পোশাক পরিয়েছেন, আমার উপর অন্যের প্রভাব-প্রতিপত্তি প্রতিহত করেছেন, আমাকে লাঞ্ছনা-অপমান হতে হেফাজত করেছেন, যখন আপনার নিকট কোন কিছূ চেয়েছি আপনি আমার ডাকে সাড়া দিয়ে উহা আমাকে প্রদান করেছেন।
আমি আপনাকে ধন্যবাদ দিলে আপনি আমাকে বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। আল্লাহ
আমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে অসংখ্য নিয়ামত ও অফুরন্ত করুনা লাভ করার পরও তাকে বিমুখতা ও অস্বীকার বশত: গ্রহন করি।
তোমার করুণাময় রবের মহা দয়া ও অনুগ্রহ লাভ সত্বেও অথচ তিনি হলেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তিনি তোমাকে তার আপন করে নিতে চান অথচ তিনি তোমার হতে সম্পুর্ণ মুখাপেক্ষীহীন, তোমাকে সচ্ছলতা প্রদান করতে চান, তুমি তার থেকে দূরে অবস্থান করতে চাইলে তিনি তোমাকে নিকট করে নিতে চান এমনকি তোমার দোষ-ত্রুটি থাকা সত্বেও তোমাকে তার নৈকট্য করে নিতে চান। তিনি সমস্ত আসমান জমিনের একচ্ছত্র মালিক তিনি তোমার থেকে তাঁর মহব্বৎ কামনা করেন অথচ তুমি এ ব্যাপারে কার্পন্যতা কর, তিনি সাতটি মহাসাগর সৃষ্টি করেছেন এরপরও তোমার এক ফোটা অশ্রু তার নিকট প্রিয় অথচ তুমি তুমি তোমার চক্ষু বন্ধ করে রেখেছ। তিনি তার বান্দাকে তার ভান্ডার হতে প্রদান করার জন্য তার নিকট চাইতে বলছেন অথচ সে তার নিকট চাইনা তারপরও তাকে অনেক কিছু প্রদান করেন। তিনি ঐ ব্যক্তির অভিযোগ কবুল করেন না যার প্রতি অনুকম্পা করেছেন তার করা অভিযোগ ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধে যার প্রতি তিনি দয়া করেন নি, এবং যে তার প্রতি জুলুম করছে তার প্রতি তিনি জুলুম করেন না এবং যে তার সাথে শত্রুতা পোষণ করে তাকে তিনি পরিত্যাগ করেন না। সুতরাং যিনি তোমাকে তার অনেক নেয়ামত দানে ধন্য করেছেন যেমন সুস্থতা, নিরাপত্তা, ধন-সম্পদ, মানসম্মান প্রভৃতি অগণীত নেয়ামত দানের মাধ্যমে যা লাভ করার পরও তুমি তার নাফরমানি করতে তাঁর এই নেয়ামতের মাধ্যমে সাহায্য কামনা কর, বিষয়টি কতইনা বেদানায়ক। তিনি তোমাকে তার দরজার দিকে আহব্বান করছেন অথচ তুমি সেখানে এসে উহা নক করছোনা তার পরও তিনি তার দরজা তোমার প্রবেশের জন্য খোলা রেখেছেন অথচ তুমি উহাতে প্রবেশ করলেনা। তোমার নিকট আল্লাহ তায়ালা তার রসূল প্রেরণ করেছেন যিনি তোমাকে তাঁর সম্মানের কক্ষের দিকে আহব্বান করছেন অথচ তুমি সেই রসূল – সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লামকে মেনে নিতে অস্বীকার করলে। আর তুমি বললে যে, আমি এই পার্থিব জগতে যা দেখি ও শ্রবণ করি ও ভোগকরি উহা কোন কিছুর বিনিময়ে পরিত্যাগ করতে পারবোনা। অথচ এতকিছু সত্বেও সেই দয়াময় প্রভূ তোমাকে তাঁর রহমত থেকে তোমাকে নিরাশ করেননি, বরং তিনি বলছেন যখন তুমি আমাকে স্বরণ করবে আমি তোমাকে ভূলবনা, যক্ষনি তুমি আমার নিকট আসবে তক্ষনি তোমাকে গ্রহণ করব, তুমি দিনে-রাতে যক্ষনি আসবে আমি তোমাকে সাদরে কবুল কবে নিব। যদি তুমি আমার দিকে এক বিগত পরিমাণ অগ্রসর হয় তাহলে আমি তোমার দিকে এক হাত পরিমাণ ধাপিত হব। আর যদি আমার দিকে হেটে আস তবে আমি তোমার দিকে হামাগুরি দিয়ে তোমার দিকে এগিয়ে আসব। যদি তুমি পৃথিবী সমপরিমাণ গুণাহ নিয়ে আমার নিকট আস এবং আমার সাথে অন্য কাউকে শরীক না করে আমার সাথে সাক্ষাৎ করো, তাহলে আমি তোমার সঙ্গে সমপরিমাণ ক্ষমা নিয়ে কিয়ামতের দিন দেখা করব। যদি তোমার গুণাহ আকাশ সমান হয়ে যায় আর তুমি আমার নিকট ক্ষমা চাও তাহলে আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিব। আমার শ্রেষ্ঠতম মহানুভবতা ও উদারতা বান্দারা লাভ করার পরও আমার সাথে আমার বান্দারা মাহাত্ম্যতা নিয়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত রয়েছে। আমি আমার বান্দাদের বিছানায় তাদেরকে খাওয়ানো ও আরাম আয়েশের ব্যবস্থা করে থাকি। কিন্তু আমার এবং জ্বিন ও মানবজাতির মাঝের সংবাদটি আশ্চর্য্যজনক; আমিই তাদেরকে সৃষ্টি করেছি কিন্তু তারা আমাকে ব্যতীত অন্যের ইবাদত করছে, আর আমিই তাদেরকে রিজিক দান করছি অথচ তারা আমাকে বাদ দিয়ে অন্যকে স্বরণ করছে এবং তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছে। আমার বান্দার প্রতি আমার কল্যাণের ধারা অব্যাহত ভাবে অবতারিত হচ্ছে অথচ তাদের নাফরমানির মাত্রা আমার দিকে উর্ধ্ব গতিতে ধাপিত হচ্ছে। আমার অগণিত নিয়ামত দ্বারা আমার বান্দাকে প্রিয় করে নিচ্ছে অথচ আমি তাদের থেকে সম্পূর্ণরুপে মুখাপেক্ষীহীন। তাদের প্রতি এরুপ মহানুভবতা ও উদারতা ব্যক্ত করার পরও তারা আমার নাফরমানীর মাধ্যমে আমার প্রতি তাদের ক্রোধ প্রকাশ করছে অথচ তারা আমার প্রতি নিতান্তই মুখাপেক্ষী। যে ব্যক্তি আমার প্রতি অগ্রসর হয় আমি তাকে দূর থেকে গ্রহণ করি এবং যে আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেই আমি তাকে নিকটতম স্থান থেকে আহব্বান করি। আর যে ব্যক্তি একমাত্র আমার জন্য ত্যাগ স্বীকার করে বিনিময়ে আমি তাকে তার ধারণাতীত নিয়ামত দান করে থাকি। আর যে আমার সন্তুষ্টি ও রেজামন্দি কামনা করে আমি তাকে তার ইচ্ছা মাফিক প্রদান করি, আর যে আমার কৌশল ও ক্ষমতার ব্যাপারে হ্স্তক্ষেপ করবে আমি তার জন্য লোহা নরম করব।
“উল্লেখ্য যে, আমাকে স্বরণকারী আমার খাস মাজলিসে উপস্থিতির অন্তর্ভুক্ত আর আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা ব্যক্তকারী আমার অতিরিক্তি প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত, আমার আনুগত্যের অনুসারী আমার মর্যদার অধিবাসীর অন্তর্ভুক্ত, আমার নাফরমানী কারীদেরকে আমার দয়া ও রহমত থেকে নিরাশ করবনা। আর যদি তারা তওবা করে আমার দিকে ফিরে আসে তাহলে আমি তাদের সবচেয়ে বড় হিতাকাংখি ও বন্ধুরুপে পরিগণিত হব, কারন আমি তাওবাকারী এবং পবিত্রতাকারীদের অত্যন্ত ভালবাসি।
نذنب و يدعونا سبحانه تعالى
আমরা গুণাহ করছি অথচ আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাওবা করতে আহব্বান করছেন
আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দার প্রতি স্বীয় দয়ার মহত্ব সম্পর্কে তোমাকে জ্ঞাত হওয়া উচিৎ যে তাঁর বান্দারা যদি কোন গুণাহর মত অপবাধও করে তবু তিনি তাদেরকে তাঁর দিকে আহব্বান করেন তাদের ক্ষমা করা জন্য। সুতরাং তুমি লক্ষ্য কর এতদসত্বেও আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে তাওবা করে তাঁর দিকে প্রত্যবর্তন করতে বলছেন। যেমন আল্লাহ তায়ালার বাণী ঐব্যক্তি সম্পর্কে যে তার আউলিয়া বান্দাদেরকে শাস্তি দিয়েছে :
إِنَّ الَّذِينَ فَتَنُوا الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ ثُمَّ لَمْ يَتُوبُوا فَلَهُمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَلَهُمْ عَذَابُ الْحَرِيقِ) )
“যারা মুমিন পুরুষ ও নারীদের প্রতি যুলম পীড়ন চালায় অত:পর তাওবা করেনা , তাদের জন্য আছে জাহান্নামের শাস্তি , আর আছে আগুনে দগ্ধ হওয়ার যন্ত্রণা।” ( সুরা বুরুজ :১০ )
হাসান বসরী – রহিমাহুল্লাহ্- বলেন : তোমরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার দয়া ও মহানুভবতার প্রতি দৃষ্টিপাত কর যে, সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে তাঁর বন্ধুদের হত্যা করার পরও তাদেরকে তাওবা করার প্রতি আহব্বান করছেন। সু-প্রশিদ্ধ একটি সত্য ঘটনা কিছু জ্ঞানী ব্যক্তিদের সস্পর্ক : তিনি কোন এক রেল লাইনে এক যুবককে দেখতে পেলেন সে দরজা খুলছে এবং বের হচ্ছে দুআ’ করছে এবং কাঁদছে আর তার আম্মা পিছন থেকে দরজা নক করে তাকে বের হতে বলছে,তার আম্মা একদিক থেকে দরজা বন্ধ করে ঘরে প্রবেশ করলে ছেলেটি সামান্য কিছু দূরে অবস্থান করে গভীরভাবে চিন্তা করল যে ঘর থেকে তাকে বিতারিত কর হয়েছে উহা ব্যতীত নিরাপদ কোন আশ্রয় স্থল নাই এবং পিতা-মাতা ছাড়া কেউ তাকে আশ্রয় প্রদান করবেনা। পরিশেষে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে চিন্তিত হয়ে বাড়ী ফিরে এসে দেখতে পেলেন যে, দরজা কাঁপছে অত:পর উহাকে বালিশ স্বরুপ নির্ধারণ করে নিজ গালটি দরজার গোবরাটে রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন। তার মা ঘর থেকে বের হয়ে যখন তার ছেলেকে এই অবস্থায় দেখতে পেয়ে নিজকে স্থির রাখার ক্ষমতা হারিয়ে ফেললেন তাকে আদর করে কোলে টেনে নিয়ে মুখে চুমু দিয়ে কেঁদে বললেন: হে প্রিয় বৎস ! আমায় ছেড়ে তুমি কোথায় গিয়ে ছিলে ? আমি ছাড়া এমন কে আছে যে তোমাকে আমার ন্যায় আদর-সোহাগ করে আশ্রয় দান করবে ? আমি কি তোমাকে বলি নাই যে, আমার বিরোধতা করবে না ? এবং তোমার অপ্রিতিকর কর্মের জন্য আমাকে তোমার ব্যাপারে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করবেনা যা আমার সৃষ্টিগত স্বভাবের বিপরীত আর তাহলো তোমার প্রতি স্নেহ-মমতা আদর-সোহাগ করা । সার্বক্ষণিক তোমার কল্যাণেই আমি মগ্ন থাকি। অত:পর মা তাকে সঙ্গে নিয়ে ঘরে প্রবেশ করলেন।
আসুন আমরা এই মায়ের বাণী সঠিকভাবে অনুভাবন করি : “তোমার অপ্রীতিকর কর্মের জন্য আমাকে তোমার ব্যাপারে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করবেনা যা আমার সৃষ্টিগত স্বভাবের বিপরীত আর তাহলো তোমার প্রতি স্নেহ-মমতা আদর-সোহাগ করা ।”
এবং রাসূল –সাল্লাল্লাহু আলইহে ওয়া সাল্লাম-বাণী অনুধাবন করুন :
“মা যেভাবে তার সন্তানের প্রতি স্নেহশীল তার চেয়েও আল্লাহ তায়া’লা তাঁর বান্দার প্রতি অধিকতর দয়াশীল”।
সুতরাং আল্লাহ তায়ালার দোয়া যা সবকিছুকে সুপ্রশস্তভাবে বেষ্টন করে রেখেছে উহার তুলনায় সন্তানের প্রতি মায়ের দোয়া অতিনগন্য।
لا غنى لنا عن الله تعالى طرفة عين
সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমত ও দোয়া চোখের পলক ফিরা সময়ও আমাদের জন্য অপরিহার্য
আর এই কারনেই প্রকৃত মুসলমান সার্বক্ষণিক আল্লাহ তায়ালার দোয়ার প্রতি মুখাপেক্ষী।সে বলে :আমি ঐ সত্তার প্রতি কিভাবে ক্রোধ ব্যক্ত করতে পারি যার রেজামন্দি–সন্তুষ্ট ছাড়া আমার জীবন অনর্থক ? যার নৈকট্য লাভ , ভালবাসা ও স্বরনই আমার জীবনের সফলতা , কামিয়ার ও সৌভাগ্য বয়ে আনবে তাকে কিভাবে আমি পরিত্যাগ করতে পারি ? তাঁর দিষ্টান্ত হল ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে তার পিতার তত্বাবধায়নে অবস্থান করছে যেই পিতা তাকে অত্যন্ত যত্নের সাথে প্রতিপালন করছে,উত্তম খাদ্য ও পোশাক আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন। তার ভবিষ্যৎ জীবন পরিপূর্ণ সফলতায় উত্তীর্ন হওয়ার জন্য সর্বচেষ্টা অব্যাহত রাখছে।একদা তার পিতা তার বিশেষ এক প্রয়োজনে তাকে পাঠাইলেন,পথিমধ্যে শত্রু তাকে গ্রেফতার করে তার মহা দুশমনের দেশে তাকে হস্তান্তর করল অত:পর তারা তার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালালো এবং সর্বপরি তার পিতা তার সাথে যে সুন্দর আচরণ করেছিল তারা তার সাথে উহার সম্পূর্ণ বিপরীত আচরণ করল। সে কিন্তু তখন তার প্রতি তার পিতার দয়া –করুনা ও সহানুভূতি তিলে তিলে স্বরণ করবে। সুতরাং তার বর্তমান অবস্থা যখনই সে কল্পনা করে তখনই তার পিতার অবদান স্বরণ করে অন্তর কেঁপে উঠে।সাথে সাথে সে পূর্বের স্মৃতি স্বরণ করে কল্পনা করে আমি কি পজিশণে ছিলাম আর বর্তমানে কি অবস্থায় দিনাতিপাত করছি । এমনি পরিশেষে সে আত্নহত্যার মত অপরাধ সংঘটিত করতেই্ কুন্ঠাবোধ করেনা।সে সবসময় তার পিতার বানানো বাড়ীর প্রতি বারবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ফিরিয়ে যেন তার পিতাকে দেখছে এবং তার নিকটে গিয়ে তাকে সম্বোধন করে বলছে: হে আমার বাবা, হে আমার বাবা, হে আমার বাবা ! আপনার ছেলের প্রতি দৃষ্টিপাত করে সে যে মহা সমস্যা ফিল করছে তা উত্তরণের ব্যবস্থা করুন । এইভাবে চিৎকার দিয়ে বলছে এমতাবস্থায় তার দু চোয়াল বয়ে অশ্রূ প্রবাহিত হচ্ছে। এই অবস্থায় সে তার বাবাকে পেয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে আছে অথচ শত্রুরা তাকে টার্গেট করে তার মাথার টিকট অবস্থান করছে আর ছেলে তার পিতাকে শক্ত করে ধরে রেখেছে যাতে শত্রুরা তাকে ছিনিয়ে নিতে না পারে। এমন পরিস্থিতিতে কেউ যদি স্বীকার হয় তাহলে কি আপনি বলবেন : যে কোন পিতা কি এই অবস্থায় তার কলিজার টুকরা ছেলেকে তার শত্রুর নিকট সোপর্দ করবে এবং তার ও ছেলের মাঝে সম্পর্ক ছিন্ন করবে ? সুতরাং ঐ সত্তার সম্পর্কে কি ধারনা পোষণ করা উচিৎ যিনি তার বান্দার প্রতি কোন পিতা তার সন্তানের প্রতি এবং মা তার কলিজার টুকরা সন্তানের প্রতি যতটুকু স্নেহ-মমতা ও আদর সোহাগ করে উহার চেয়ে হাজারও গুণ করুণাময় আল্লাহ তায়ালা তার কোন বান্দা যখন তার দিকে ভূল বুঝতে পেরে ফিরে আসে এবং কাকুতি মিনতি স্বরে আল্লাহকে ডাকতে থাকে: হে আমার রব, হে আমার পরওয়ারদিগার, হে আমার প্রতিপালক ! আমার প্রতি আপনি রহম করুন দয়া করুন কারন আপনার দয়া ছাড়া আমার কোন উপায় নাই, আপনি ছাড়া আমার আর কেউ সাহায্যকারী নাই , আপনি ছাড়া আমাকে আর কেউ আশ্রয় দান করতে পারবেনা, আপনি ছাড়া কেউ আমাকে উদ্ধার করতে পারবেনা , একমাত্র আপনিই আমার আহব্বানে সাড়া দিয়ে থাকেন । আমি আপনার অসহায় বান্দা, একমাত্র আপনিই আমার আশা-ভরসা, আপনার নিকট ছাড়া আমার কোন আশ্রয় স্থল নাই, আপনি ব্যতিত কেউ আমাকে নাজাত দিতে পারবেনা, আপনার নিকটই আমি যাবতীয় খারাবী থেকে পানা চাই, আপনিই আমার আশ্রয় দাতা।
হে আমার আশা-আকাংখা পূরুণকারী আপনার নিকট আমি আশ্রয় চাই
আপনার নিকট পানা চাই যা আমার ক্ষতি করতে চাই
যাকে আপনি ক্ষতি করতে চান তাকে কেউ সাহায্য করতে পারে নাই
আপনার মতত্বের বদৌলে যাকে সাহায্য করেন তার কেউ ক্ষতি করতে পারে নাই
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল – রহিমাহুল্লাহ্ – তদীয় মুসনাদে হাদীস বর্ণনা করেন :এমন কোন দিন অতিবাহিত হয়না যেদিনে সমুদ্র আল্লাহর নিকট আদম সন্তানকে ডুবানোর অনুমতি কামনা করে। আর ফেরাশতাগন তাকে ধ্বংশ করার কামনা করে থাকে। অথচ মহাপ্রতিপালক করুণাময় আল্লাহ তায়ালা বলেন : আমার বান্দাকে তোমরা ছেড়ে দা্ও কারন আমি তার সম্পর্কে সম্যক অবগত আছি যে দিন থেকে আমি তাকে সৃষ্টি করে জমীনে বিচরণ করার তাওফীক দিয়েছি। সুতরাং যদি বিষয়টি যদি তোমাদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে থাকে তাহলে সেটি তোমাদের ব্যাপার আর যদি আমার বান্দা আমার হক্ব আদায়ে কোন রকম কমতি করে থাকে তাহলে তা আমার দিকে বর্তাবে। আমার সম্মানের ও বড়ত্বের কসম দিয়ে বলছি যদি আমার কোন বান্দা রাতে অপরাধ করে দিনে ক্ষমা চাইলে তাকে দিনে ক্ষমা করে দিই তদ্রুপ দিনে অপরাধ করলে তাকে রাতে ক্ষমা করে দিই।
أعجب الأشياء
আশ্চর্যের বিষয় সমূহ্
এই সব কিছুর পর “ নিশ্চয় আশ্চর্যের বিষয় হল যে, তুমি আল্লাহকে চিন জান বলে দাবি কর অথচ তাকে ভালবাস না , তার ধ্বণিত: আহব্বান শুন অথচ তার ডাকে সাড়া দিতে বিলম্ব কর , তুমি তাঁর দেওয়া নির্দেশ অনুপাতে ব্যবসা করে লাভবান হও অথচ এর পরেও অবৈধ পন্থায় লাভবান হতে চাও, তাঁর রাগান্বিত ভাব অনুধান করার পরও তার সন্তুষ্টির বিপরীত চল , তার অবাধ্যতায় একাকীত্বের বেদনার স্বাদ নিতে চাও অথচ তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমে অন্তরংগতা ও প্রফূল্ল লাভ করতে চেষ্টা করনা , তাঁর সম্পর্কে অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে অতিরিক্ত আলাপে হৃদয়কে ছিঁড়ে ফেলের স্বাদ গ্রহণে আগ্রহী হয় তারপরও বেশি করে নিরালয়ে নির্জনে তার নিকট দুআ ও তাকে অধিক পরিমাণে স্বরনের মাধ্যমে হৃদয়কে প্রশস্ত করতে অধিক আগ্রহী হয়না , আল্লাহ ছাড়া অন্যকে অন্তর দিয়ে ভালবাসার দরুন শাস্তি আস্বাদনে আগ্রহী কিন্তু উহা পরিত্যাগ করে তার উপর প্রাপ্ত নিয়ামতের কথা স্বরন করে তার দিকে বেশি পরিমাণে অগ্রসর হতে ইচ্ছুক নয়, এর চেয়েও সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল যে, তুমি সম্যক অবগত আছ যে অবশ্যই তুমি তাঁর দয়া ও অনুগ্রহ ছাড়া সামান্য সময়ও কল্পনা করতে পারনা এবং সার্বক্ষণিক তার প্রতি তুমি মুখাপেক্ষী অথচ তুমি তার থেকে পৃষ্টপদর্শণ করছ এবং যেসকল বিষয় তোমাকে আল্লাহর নৈকট্য লাভে প্রতিবন্ধক উহার প্রতি তুমি খুবই আগ্রহশীল ”
প্রভূর ভালবাসা কর ব্যক্ত, সাথে সাথে হও তার অবাধ্য
যার বিপরীতে উহা কত নিকৃষ্ট, তাইতো নয় উহা সম্ভাব্য
যদি তারে ভালবাসায় হতে সত্যবাদী, তবে তার হতে আনুগত্য
কারন কথায় বলে যে যারে বাসে ভাল , সে তারে হয় অনুগত
সব সময়ে আছো তুমি, তার নিয়ামতে আবৃত
অথচ আছো তুমি, তার অকৃতজ্ঞতায় অনবরত
وقفة تأمل مع قصة حب
আসুন ভালবাসার ঘটনা অনুধাবণ করি
উহুদের যুদ্ধ শুরু হওয়া সামন্য পূর্বে একজন সাহাবী তার এক সঙ্গীকে বললেন : আসুন শত্রুদলের মুকাবেলা করার পূর্বে আল্লাহর নিকট দুআ’ করি। অত:পর প্রথম ব্যক্তি দুআ’ করে বললেন : হে আল্লাহ ! আজকে এইদিনে আমি আপনার নিকট পার্থনা করছি যে, আপনি আমার এবাং আপনার কঠোর ক্রুদ্ধ শত্রু কাফেরের মাঝে বীরোত্তমে যুদ্ধ করে তাকে হত্যা করার তাওফীক দাও ।
অপর দ্বিতীয় ব্যক্তি দুআ’ করলেন : আজকে এইদিনে আমি আপনার নিকট একনিষ্ঠ্যভাবে পার্থনা করছি যে,আপনি আমার এবাং আপনার কঠোর ক্রুদ্ধ শত্রু কাফেরের মাঝে বীরোত্তমে যুদ্ধ করি অত:পর আমাকে হত্যা করা হবে অত:পর আমার পেট ফেড়ে ফেলানো হবে , আমার চোখ উপড়ে ফেলা হবে, আমার কান কেটে ফেলা হবে আর আমার নাক ফেটে ফেলা হবে এই অবস্থায় যখন আমি কিয়ামতের দিন আপনার নিকট উপস্থিত হব তখন আপনি আমাকে বলবেন : হে আমার বান্দা : তোমার সাথে এমন অপরাধ কেন করা হল ? তখন আমি বলব : হে আমার প্রভূ ! একমাত্র আপনার সন্তুষ্টির কামনায় আমার আমি এইভাবে শহীদ হয়েছি । অত:পর যখন যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটল তখন তারা তাকে নিহতদের মাঝে পেট ফেড়া, নাক ফেটা,চোখ উপড়ে ফেলা এবং কান কাটা অবস্থায় দেখত পেল।
হে আল্লাহ ! এতে আমি একমাত্র আপনার সন্তুষ্টির কামনা করি।
: সমাপ্ত :